অচিরেই স্থানান্থর হচ্ছে ছাতক সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়

ফজল উদ্দিন ছাতক প্রতিনিধিঃ শীগ্রই ভাড়া বাড়িতেই স্থানান্তর হচ্ছে ছাতক সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়। জরাজীর্ণ ভবন ও ব্যবহারের অনুপযোগী বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রেজিষ্ট্রারী কার্য ব্যাহত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এটিকে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইন মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ উপজেলার সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয় স্থানান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব থেকে ছাতক শহরের ফরেষ্ট অফিস কার্যালয় সংলগ্ন একটি ভাড়া বাড়িতে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের দিকে উপজেলা সদরের কোর্ট ভবনে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় স্থানান্তর করা হয়।
১৯৮৩ সালের দিকে নির্মিত তৎকালিন ছাতক কোর্ট ভবনটি এখন অনেকটাই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনে দেখা দিয়েছে ফাঁটল, বৃষ্টির পানি চুয়ে ভবনের দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় রয়েছে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, কার্যালয়ে সাব-রেজিস্ট্রার বসার মতো পরিবেশও নেই। দলিল-পত্র অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
স্থানীয় দলিল লেখকগন সার্বিক এই অবস্থায় জমির দলিল রেজিষ্ট্রারি করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কয়েক ঘন্টার টানা বৃষ্টির কারনে ভবনের সামনে দেখা দেয় ব্যাপক জলাবদ্ধতা। কার্যালয় চত্বরটি অনেক নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে রেকর্ড রুমসহ অফিস চত্বরে ২/৩ ফুট পানিতে ডুবে যায়। দ্রুত পানি বাড়লে রেকর্ড রুমের ক্ষতির আশংকা বেড়ে যায়। তখন এখানে নিরাপদে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়ে।
চলতি বছরের মে মাসে উপজেলায় প্রথম দফা বন্যায় সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের কিছু ক্ষতি হয়। দ্বিতীয় বন্যায় সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ের এজলাসের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকার অক্লান্ত পরিশ্রম ও বিচক্ষনতায় অফিসের স্টাফরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাবতীয় রেকর্ডপত্র দ্রুত অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে রক্ষা করতে সক্ষম হন। যে কারণে যাবতীয় রেকর্ড ফাইল অক্ষত অবস্থায় থাকে। পর পর দু”দফা বন্যায় অফিসের আসবাবপত্র, সহ অন্যান্য মুল্যবান জিনিসের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
এর আগে ১৬ মে প্রথম দফা বন্যার পর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এসব সমস্যার বিষয়ে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহা-পরিদর্শক বরাবরে প্রতিষ্ট্রানটি স্থানান্তরের আবেদন জানানো হয়। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ‘ছাতক সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়’ স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সে অনুযায়ী নিববন্ধন অধিদপ্তরের মহা পরিদর্শকের নির্দেশে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক (আইআরও) মোস্তাক আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম ও জেলা সদরের সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুল করিম ধলা মিয়া গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ছাতকে আসেন। ছাতক সাব রেজিস্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকা, অফিস সহকারী আবদুর রহিম ও দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ঘুরে ছাতক-সিলেট সড়কের পৌরশহরের রহমতভাগ এলাকার জনৈক আশফাক চৌধুরীর দ্বিতল ভবনটি ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পর দিন ওই ভবনের মালিকদের সাথে ভাড়া প্রাথমিক ভাবে চুড়ান্ত করা হয়।
এসময় ছাতক দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, সাধারন সম্পাদক রঞ্জন কুমার দাস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজুল ইসলাম ও কাজী আনোয়ার মিয়া আনু, সহ সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, অর্থ সম্পাদক মুহিবুল হক, সাবেক অর্থ সম্পাদক বাকিবিল্লাহ, সদস্য লিকছন দাস, শাহীন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্রে জানা গেছে, রহমতভাগ এলাকায় নতূন কার্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে গত সোমবার সাব-রেজিস্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকার সাথে এক আলাপকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেছেন, সপ্তাহ দশদিন সময় নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও ভালো স্থান পাওয়া যায় কি না। পাশাপাশি তিনি ও ভালো স্থান দেখবেন বলে সাব রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছেন। সাব-রেজিস্ট্রার আয়েশা সিদ্দিকা জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরাজির্ণ কার্যালয়টি দ্রুত স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।