অবহেলিত জনপদের নাম কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়ন

মোঃ রাসেল মোল্লা, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবহেলিত জনপদের নাম চম্পাপুর ইউনিয়ন। ইউনিয়নটিতে সর্বমোট ৬০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে মাত্র ৬ কিলোমিটার পাকা। তার মধ্যেও প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক অবার খানাখন্দে ভরা। কোনো কোনো স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও কার্পেটিং উঠে গিয়ে দেবে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। আর কাঁচা রাস্তাগুলোতে বর্তমানে হাঁটু সমান কাদা রয়েছে। এসব রাস্তার মাঝে চলাচলের জন্য স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে স্থাপন করেছে বাঁশের সাঁকো। এছাড়া ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে চরম ভোগান্তিতে পরে ওই ইউনিয়নের মানুষ। এমন চিত্র ফুটে উঠেছে উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী বৃহত্তর ধানখালী ইউনিয়ন থেকে বিভক্ত হয়ে ২০১১ সালে ১২টি গ্রাম নিয়ে এ ইউনিয়নটি গঠন হয়।
এখানে ১২টি সরকারি, ২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি দাখিল মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ইউনিয়নটিতে মোট ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। বিশাল এ জনবসতিপূর্ণ ইউনিয়নের ৬০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৫৪ কিলোমিটারই কাঁচা সড়ক। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ থাকলেও তাও আবার একটি একচাল টিনের ঘর। সেখানে বসেই চলছে ইউনিয়নের সকল কার্যক্রম। তবে এসব রাস্তা-ঘাট পাকাকরণসহ সংশ্লিষ্ট স্থাপনা নির্মাণ করার দাবি জানান ভুক্তভোগী ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
ডেইলি ঢাকা মেইল কে ওই ইউনিয়নের বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, রাস্তার যে অবস্থা তাতে উপজেলা সদর হতে মালামাল আনতে হিমশিম খেতে হয়। যে রাস্তাটুকু পাকা রয়েছে তাও ভাঙ্গাচুরা। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। রাস্তা মেরামত ও কাঁচা রাস্তা পাকা করার জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।
একই এলাকার বাসিন্দা আলতাফ গাজী ডেইলি ঢাকা মেইল কে বলেন, চম্পাপুর ইউনিয়নটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে, অথচ এ ইউনিয়নে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এমন কথা বলেছেন ওই ইউনিয়নের আরো অনেকে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আভাসের স্পন্সরশীপ অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম ডেইলি ঢাকা মেইল কে বলেন, চম্পাপুর ইউনিয়নের প্রায় নব্বই ভাগই কাঁচা রাস্তা, যতটুকু পাকা রাস্তা আছে তা উচ্চ জোয়ারের কারণে ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে অসহনীয় দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এ জনপদের মানুষ, যা এখনকার সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডেইলি ঢাকা মেইল কে ইউপি সদস্য মো. বাচ্চু মোল্লা বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে অত্যন্ত অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে এ ইউনিয়ন। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে কাঁচা পাকা রাস্তা ঘাটগুলো ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। এ সকল ভাঙ্গা সড়ক পাকাকরণ ও ইউনিয়নের কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান।
চম্পাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার বলেন, ২০১১ সালে বৃহত্তর ধানখালী ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে চম্পাপুর ইউনিয়ন গঠিত হয়। এরপর থেকে রাস্তা ঘাট নির্মাণ ও মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে একাধিকবার আলোচনা করে আসছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ইউনিয়নটির প্রতি সুদৃষ্টি দিবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার উন্নয়ন এলজিইডি’র উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোহর আলী বলেন, ওই ইউনিয়নের পাকা সড়কটি সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে। আরো কিছু সড়ক পাকাকরণের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।