অভয়নগরে কাঠপুড়িয়ে কয়লা তৈরির অবৈধ চুল্লিতে অভিযান

মোঃ কামাল হোসেনঃ যশোরের অভয়নগরে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার চুল্লি ভেঙ্গে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের সোনাতলা ও ধুলগ্রাম অঞ্চলের ৪৩টি কাঠ কয়লার চুল্লি ভেঙ্গে দেয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক থান্দার কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে। অবৈধভাবে তৈরি কাঠকয়লার চুল্লি ভেঙ্গে ফেলায় স্থানীয় জনগনের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের অগোচরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছিল স্থানীয় কিছু প্রভাশালীরা। ইতিমধ্যে কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি প্রশাসনের মাধ্যমে চুল্লিগুলো ভেঙ্গেও দেওয়া হয়।কিন্তু পরবর্তীতে কোন এক অদৃশ্য শক্তি নিয়ে আবার নতুন উৎদ্দমে শুরু করেন এই অকর্মের কাজ।
স্থানীয় ভূক্তভোগিরা জানান, এই চুল্লির কারনে ঘন বসতিপূর্ণ এ অঞ্চলের সবুজ গাছের পালাগুলো ধূসরে পরিনত হতে শুরু করেছে। বিস্তীর্ণ সবুজ ক্ষেতের পাতা পুড়ে গেছে। গাছের ডাল পাতা পুড়ে গেছে ধোয়ার বিষাক্ত বাতাসে। মারা যাচ্ছে নদীর পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যার ফলে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে অপরদিকে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। বৃদ্ধ, শিশু ও পরিবেশ সবই ভয়াবহ সংকটের মুখে। অবশেষে সংবাদপত্রে ঘটনা প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। সোমবার সকালে স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশের সহযোগিতায় (৪৩) চুল্লি ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় নির্বাহী ম্যাজিট্রেট।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো.হারুন অর রশিদ, অভয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল কৃষ্ণ দাস, ইউনিয়ন ভূমির সহকারি কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার শীল এবং আমতলা ক্যাম্প ইনচার্জ মো.রফিকুল ইসলাম সহ আমতলা ও সোনাতলা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যবৃন্দ প্রমুখ।
এবিষয়ে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক বলেন, কয়লা তৈরির এই চুল্লি থেকে বিষাক্ত ধোয়ার কারনে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনা। তবে এই চুল্লি ভেঙ্গে ফেলাই আমরা খুশি হয়েছি।
এলাকাবাসী জানান, এই অবৈধ কয়লা তৈরির চুল্লি ভেঙ্গে ফেলায় জনমনে স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের সব সময় নজরদারিতে রাখতে হবে । আবার যেন নতুন করে এই অপকর্ম শুরু না করে।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক থান্দার কামরুজ্জামান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর ৫৮ টি এবং বাকি ৪৩টি কয়লার চুল্লি আজ ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে এই চুল্লি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে এধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে।