অভয়নগরে কৃষি কর্মকর্তা কালোবাজারে সার বিক্রির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন

মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:যশোরের অভয়নগর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্বপংকার কালোবাজারে সার বিক্রির কথা বলে সাব ডিলারদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কয়েকবার ধমক খেলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছেন এসব কর্মকান্ড। ধুরন্ধর এই শ্বপংকার ইতোমধ্যে সাব ডিলারদের কাছে চিটার উপাধি পেয়ে বেশ দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন তার কর্মকান্ড। ভুক্তভোগী উপজেলার ৫নং শ্রীধরপুর ইউনিয়নের হরিষপুর বাজারের সাব ডিলার আঃ রাজ্জাকের ছেলে আহাদুজ্জামান জানান, উপ-সহকারী কৃর্ষি কর্মকর্তা শ্বপংকার আমাকে সার দিবে বলে আমার কাছ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। তিনি গত মে মাসের শেষের দিকে সার দেবার কথা বলে নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি আরও জানান, ওই কৃর্ষি কর্মকর্তার হাতে লেখা এবং তার স্বাক্ষর যুক্ত সাদা কাগজের তালিকায় সারের মূল্য লিখে জানিয়েছেন, ইউরিয়া সার ৩০০ বস্তা যার প্রতি বস্তার মূল্য ৮৫০ টাকা, এমওপি (পটাশ) ৪০০ বস্তা, যার প্রতি বস্তার মূল্য ৮০০ টাকা এবং টিএসপি ১০০ বস্তা যার প্রতি বস্তার মূল্য ধরা হয়েছে ১১০০ টাকা। এই হিসাবে শ্বপংকার ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এবং সিকিউরিটি বাবদ শ্বপংকার তার নিজ নামীয় প্রাইম ব্যাংক যশোর শাখার অনুকুলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি চেক আমাকে প্রদান করেন। কিন্তু তার দেয়া ২৯-০৮-২০২২ তারিখ ওই চেক নিয়ে ব্যাংকের যশোর শাখায় (১৭০৪১০৯৪৬) শ্বপংকর মিত্র নামের একাউন্টে (নং ২১২৩২১৫০১৬০০৪) কোন টাকা নেই। তিনি আরো জানান, এখন সার চাইলে বিভিন্ন তালবাহানা ও ভয় ভীতি প্রদান করছে আমাকে। এদিকে সারকারি সার গোপনে সাব ডিলার আহাদুজ্জামানের কাছে বিক্রয়ের কথা বলে সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে উঠে আসলে কৃষি কর্মকর্তা শ্রীধরপুর বাজারে যাওয়া বন্ধ করেছেন বলে জানালেন সাব ডিলার আহাদুজ্জামান। এব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্বপংকর এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, সার ডিলারের মাধ্যমে ছাড়া বিক্রয়ে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে তাদের চাহিদা অনুযায়ী। এক প্রশ্নের জবাবে ওই কৃষি কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ইউরিয়া সারের বাজার মূল্য প্রতিবস্তা ১১০০ টাকা, প্রতিবস্তা টিএসপি সারের মূল্য ১১০০ টাকা এবং এমওপি সারের প্রতিবস্তা ৭৫০ টাকা। সাব ডিলার বস্তা প্রতি ২৫ টাকা ছাড়পান। সার বিক্রয়ের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয় অস্বীকার করে তিনি জানান, সাবডিলার আহাদুজ্জামানের কাছে কোন সার বিক্রয় করার কথা বলে কোন টাকা নেয়া হয়নি। তিনি আরো জানান, এরকম ধরনের কোন লেনদেন তিনি কারোর সাথে করেননি। দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার চেকের কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, চেকের কোন প্রমান দিতে পারলে বিশ্বাস করব ঘটনা সত্য। তিনি আরো জানিয়েছেন, সব কৃষক বা ডিলার সমান না অনেকে একটু অন্যরকম। তাদের উপকার করলে দেখবেন তারা ক্ষতি করে। এবিষয়ে অভয়নগরের শ্রেষ্ঠ কৃষক নামে পরিচিত কোদলা গ্রামের সুকেন রায় জানান, টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমি জানি। ওই কৃষি অফিসার চিটার প্রকৃতির মানুষ। আহাদুজ্জামানের সাথে সার বিক্রয় করার কথা বলে টাকা লেনদেন ও চেকের বিষয় সম্পূর্ণ সত্য। এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানি জানান, ওই সাব ডিলার এত জায়গা রেখে ওই শ্বপংকারের কাছে কেন যায়? এত ডিলার রয়েছে তাদের কোন অভিযোগ নেই যত অভিযোগ ওই সাব ডিলারের? তাছাড়া এধরনের কোন অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেনি, করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।