এম এইচ রহমান ফুয়াদঃ গত ১০ বছর ধরে দলীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমিশন বাণিজ্য এবং বিভিন্ন দল থেকে নিয়ে আসার রাজনীতি কর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেওয়া, দলের দুঃসময় ত্যাগী কর্মীদের বঞ্চিত করা, সাংগঠনিকভাবে যোগ্য ব্যক্তিদের কে অবমূল্যায়ন করা সহ নানান অভিযোগ নিয়ে আমরা তৃণমূল নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্নভাবে সরব ছিলাম, তারেই ধারাবাহিকতা ধরে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা গত বছর দীর্ঘ তিন মাস লাগানহীন আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ মিছিল-মিটিং সহ এ অপরাজনীতি বন্ধে নানান তৎপরতা চালায়, নানান সংঘাত সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে, যার ধারাবাহিকতায় জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয় এবং নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনাম চৌধুরী সেলিম কে আহবায়ক করে এবং এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন, কে সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ও পৌর মেয়র, শহিদুল্লাহ খান সোহেলকে যুগ্ন আহবায়ক করে কমিটি ঘোষণা দেয়, কিন্তু তারপরও রাজনৈতিক সংকট কাটেনি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য জনাবে একরামুল করিম চৌধুরীর অনুসারীরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে এবং তারা একটা বিকল্প জেলা কমিটি না হওয়ার কঠোর অবস্থান গড়ে তোলে, এইদিকে নবগঠিত জেলা আহবায়ক কমিটিও দুঃসময়ের ত্যাগী, বঞ্চিত কর্মীদের মূল্যায়নের তেমন কোনো উদ্যোগ এখনো নেয়নি।

সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় একরামুল করিম চৌধুরী উপস্থিত হয়ে তার বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূক্ত আচরণের জন্য দল এবং জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সহনশীল এবং ইতিবাচক রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করেন, ঠিক সেই মুহূর্তে একটি শ্রেণি দলের এই সম্ভাবনাময় ঐক্যবদ্ধতাকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে পড়েন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিনের বিরুদ্ধে নানান রকম মিথ্যা অভিযোগ তুলতে শুরু করে, এবং একটি পক্ষ আরেক যুগ্ম আহবায়ক শহীদুল্লাহ খানের পক্ষ অবলম্বন করে নানান তৎপরতা চালিয়ে আসছে, আবার আরেকটি মহল পৌর মেয়র শহীদুল্লাহ খান সোহেলের মদ্যপান সহ নানান ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে, এভাবে একের পর এক জেলা শীর্ষ নেতাদের চরিত্র হননের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ কে দুর্বল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত একটি মহল।

উল্লেখ্য থাকে যে জেলা আওয়ামী লীগের দুই যুগ্ম আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর আস্থাভাজন ও বিশ্বাসী লোক হিসেবে এক সময় বিবেচিত হতো এবং রাজনীতিতে একরামুল করিম চৌধুরীর মাধ্যমে নানান সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন।

রাজনীতিতে কেউ ভুলের উর্ধ্বে নহে, গত চৌদ্দ বছরের শাসনামলে একরামুল করিম চৌধুরীর ভুলের পাশাপাশি অনেক ইতিবাচক রাজনীতি কর্মকান্ড রয়েছে, যাহা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই ভোগ করেছেন বেশিরভাগ।

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কেউ ধোয়া তুলসী পাতা নহে, জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ে এই ৩ জন ( আকরামুল করিম চৌধুরী, এডভোকেট শিয়াদ উদ্দিন শাহিন, শহীদুল্লাহ খান সোহেল) বিভিন্নভাবে দলের দুঃসময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তাদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে, তাই দলের ভেতর অবস্থানরত বিএনপি, জাসদ, জামাত-শিবিরের প্রত্যাবাসনকৃত নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

তা না হলে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখা কঠিন হয়ে উঠবে, তাই আমি মনে করি খারাপ ও ভুলগুলোকে শুধরিয়ে আগামী সংকটকালীন রাজনীতির সমাধানের লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ জরুরি। নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হয়ে দলকে সু সংগঠিত করার এখনই শ্রেষ্ঠ সময়।

অতি উৎসাহী কিছু তরুণের মাধ্যমে একজন আরেকজনকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে যে সমস্ত নোংরামি ফেসবুক ও বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াচ্ছেন তা কারো জন্য মঙ্গল বহে আনবে না, এতে দুর্গন্ধ ছড়াবে মাত্র।

মনে রাখবেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আপনাদের নেতৃত্ব থাকবে আর ক্ষমতাহীন হয়ে পড়লে আপনাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে তাই সংগঠনকে শক্তিশালী করুন, নিজেদের ভিতর কোন্দল বন্ধ করুন, না হলে সুবিধাভোগী ওই মহলটি একে একে আপনাদের সকলের চরিত্র হনন করে যাবে।