ফুলতলার বেজেরডাঙ্গা টু ভাটপাড়া সড়কের বেহাল দশা:সওজ ও এলজিইডি’র রশি টানাটানি: ভোগান্তি চরমে

আমিনুর রহমান: খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙ্গা টু ভাটপাড়া খেয়াঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা।পুরো রাস্তা জুড়েই খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে।রাস্তার পিচ,বিটুমিন উঠে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে সড়কটি ছিল এলজিইডি’র আওতায় ছিল।পরে রাস্তাটি সড়ক ও জনপদ নিয়ে নেয়।কিন্তু তারা কোনো উন্নয়ন বা সংস্কার করেনি।একদিকে সড়ক ও জনপদ অন্যদিকে এলজিইডির মধ্যে রশি টানাটানিতে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে সংস্কারের ছোয়া না লাগায় গুরুত্বপূর্ণ এসড়কটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জন গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক সংলগ্ন সাতটি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান, পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্টান, চারটি বাজার এবং পাঁচটি সার সিমেন্ট ও কয়লাঘাটে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
নব্বই দশকের প্রথম দিকে বেজেরডাঙ্গা টু ভাটপাড়া খেয়াঘাট সড়কটি ছিল ইটের নির্মিত হেরিংবোন্ড। পরে ১৯৯৬-৯৭ সালে বেজেরডাঙ্গা টু ভাটপাড়া খেয়াঘাট হয়ে নড়াইল পর্যন্ত রাস্তাটির কার্পেটিং করা হয়। ফলে যাতায়াতের সুবিধার্থে এ সড়কে বাস চলাচলও শুরু করেছিল। দূরত্ব কম হওয়ায় এ এলাকার অনেকেই নড়াইল হয়ে কালনাঘাট পার হয়ে ভাটিয়াপাড়া দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে। আবার একদিকে ভৈরব নদী অন্যদিকে সড়ক পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এ এলাকায় আইয়ান জুট মিল, সুপারেক্স লেদার মিল, বাংলাদেশ এগ্রো কেমিক্যাল লিমিটেড, জয়তুন অটো রাইস এন্ড ফ্লায়ার মিল, লালন শাহ অটো ফ্লায়ার মিল, তিতাস সল্টসহ শেখ ব্রাদার্সের আরো কয়েকটি বৃহৎ শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া নদী পথে সার, সিমেন্ট কয়লা, পাথর, গমসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী লোড-আনলোডের জন্য পাঁচটি ঘাট ও জেটি নির্মিত হয়েছে। আবাসিক এ এলাকায় স্কুল কলেজ, মাদ্রাসাসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দেড় যুগ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের সংস্কারের ছোয়া না লাগায় কার্পেটিং ওঠে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তে পরিনত হয়ে চলাচলর অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে বিভিন্ন পেশার হাজার মানুষ, পথচারী, পণ্যবাহী ট্রাক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিদিনই ঘটছে অহরহ দূর্ঘটনা ।
স্থানীয় কয়েকজন ভ্যানচালক ও ইজিবাইক চালক বলেন, রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উত্তরডিহি ও যুগ্নিপাশা ঘুরে মহাসড়কে উঠতে হচ্ছে। ফলে কষ্ট ও সময় নষ্ট হওয়ায় আমরা নাজেহাল হচ্ছি।
যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনে ওই পথ দিয়ে গাড়ি চালাতাম। তবে গত ২ বছর এ রাস্তার অবস্থা এতটা খারাপ হয়েছে, ওই পথ দিয়ে আর গাড়ি চালাচ্ছি না।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মচারী সৈয়দ ইরান আলী( ৪০) বলেন, পায়গ্রাম টু বেজেরডাঙ্গা সড়ক চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় মোটরসাইকেল নিয়ে শিকিরহাট সড়ক দিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ফুলতলায় আসতে হয়।
ভদ্রপুকুর এলাকার বাসিন্দা কাজী আজহারুল ইসলাম রাজা বলেন, প্রসূতি অথবা অন্য যে কোনো রোগীকে জরুরিভাবে চিকিৎসার জন্য ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাতে গেলে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়। এতে রোগীদের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়
ফুলতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশার বলেন, নব্বই দশকে এলজিইডির নির্মিত কার্পেটিং সড়কটি পরবর্তীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগে চলে যায়। যে কারণে এলজিইডির কোন দায়িত্ব থাকে না। আবার সড়ক ও জনপদ বিভাগ এ সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ নেয়নি। শোনা যাচ্ছে বর্তমানে এটিতে আবারও এলজিইিডি আওতায় কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াসিন আরাফাত বেজেরডাঙ্গা টু পায়গ্রাম কসবা গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি চিঠিতে জানা গেছে সওজ তাদের আওতা থেকে ৩ কিলোমিটার এ সড়কটি আইডি থেকে বাদ দিয়েছে। তবে তা এখনও এলজিইডির আওতাভুক্ত হয়নি। এলজিইডির আওতাভুক্ত হলেই সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া যাবে।