মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি

ওয়াহিদুল ইসলাম, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ আসন্ন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড (রাঙ্গুনিয়া) সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনি এ মনোনয়ন ফরম জমা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, উত্তরজেলা আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিচ আজগর, উত্তরজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, উত্তরজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আকতার হোসেন খান, রাঙ্গুনিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার খাইরুল বশর মুন্সি, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের বিখ্যাত জমিদার অছি মিয়া সওদাগরের নাতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতী আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত প্রাণ। একজন সৎ,নির্ভিক সহজ-সরল, উন্নত মন মানসিকতার বিনয়ী ত্যাগী। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ও সদস্য । এছাড়াও তিনি থানা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জেলা মুক্তিযুদ্ধ সংসদের প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন এবং চট্রগ্রামের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উৎযাপন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক ও রাঙ্গুনিয়া মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও নিজ ইউনিয়ন মরিয়ম নগর আওয়ামীলীগ গঠনে ৭০ দশক হতে তার অবদান অপরিসীম। ১৯৮৬ সালে তিনি দুঃসময়ে রাঙ্গুনিয়া সংসদীয় আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকা অর্জন করলে ও পরবর্তীতে পরিবর্ধিত পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের অনুসারী সমমনা দলসমূহের ঐক্যের ভিত্তিতে তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী নির্বাচনী জোট “১৫ দলীয় জোট” গঠিত হলে দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৫ দলীয় প্রার্থী কমিউনিস্ট পার্টির মোঃ ইউসুপ এমপি(৯১) এর সমর্থনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। এমপি ইউসুপ তাহার ফুফাতো ভাই। কমিউনিস্ট পার্টির সল্প সংখ্যক লোক থাকার সত্বে ও দলীয় আনুগত্যের কারণে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও দলীয় প্রতীক নৌকা হস্তান্তরের ফলে ৮৬ নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী এমপি ইউসুফ এর রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা এনে দেয়। যার ফলে ৯১ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী এমপি ইউসুফ বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি চট্টগ্রামের বিখ্যাত জমিদার অছি মিয়া সওদাগর এর নাতি। অছি মিয়া সওদাগর পূর্ব বাংলার ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রামের চাক্তাই খাতুনগঞ্জের তৎসময়ের সেরা ব্যবসায়ীদের একজন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মরিয়ম নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রাক্তন আহব্বায়ক এবং মরিয়ম নগর এর দুবারের চেয়ারম্যান প্রয়াত লোকমান হক তাহার চাচা ও মরহুম শিল্পপতি শাহাদাত সাহেব, ইলিয়াজ হায়দার, মোহাম্মদ ইসমাইল সওদাগর, কনকর্ড ইন্টার্নেশনাল মালিক আবু জাফর তার চাচাতো ভাই এবং আবুধাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ইফতেকার হোসেন বাবুল তার ফুফাতো ভাই৷
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক, গণতন্ত্র বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি যখনই চট্টগ্রামে আসেন ফোন করে বলতে ভুলেন না চিশতী ভাই কোথায় আপনি? এই সাদামাটা মানুষটি মন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয় ও বিশ্বস্ত। যিনি চিরকালই বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা নিয়ে রাজনীতিতে গতর কাটছে যারপরনাই।
১৯৬৯ সালের মাঝামাঝিতে সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাঙ্গুনিয়া সফরে আসেন। তখন চিশতী বঙ্গবন্ধুকে অতি বিনয়ী হয়ে বলেন যে,নামাজ শেষে রাঙ্গুনিয়া থানায় যেতে হবে। আপনি গেলে মানুষ খুশি হবে। খুব বেশি সময় লাগবেনা। বন্যা কবলিত গুমাই বিলের অবস্থাও দেখতে পাবেন। দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ ছাত্রলীগনেতা চিশতীকে বঙ্গবন্ধু যাবে বলে কথা দিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া হয়ে কাপ্তাই রেষ্টহাউসে রাত্রী যাপন করেন। সে সময়ে চিশতীকে বেতবুনিয়াতে বঙ্গবন্ধু বলেছিল তুমি কাপ্তাই এসে দেখা করো। চিশতীকে বঙ্গবন্ধু খুবই ভালোবাসতেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড।দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর ছায়াতলে চিশতী ছাত্রলীগের রাজনীতির সুযোগে বঙ্গবন্ধুকে খুব কাছে থেকে দেখেছেন।