মিঠাপুকুরে দুলা ভাইয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে শালির অনশন

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৪ নং- দূর্গাপুর ইউনিয়নের খামার হরিপুরে বিয়ের দাবিতে ৮ম-শ্রেনীর এক ছাত্রী ৭২ ঘন্টার বেশী সময় ধরে অবস্থান করছেন। ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও ঐ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে তার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। একাধিক বৈঠক আর মিমাংসার চেষ্টা করেও কোন সমাধানে আসতে পারেনি উভয়পক্ষ। এ নিয়ে ঐ এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীসহ স্হানীয়রা জানান, উপজেলার শঠিবাড়ীস্হ খামার হরিপুর গ্রামের রফিক মিয়ার পুত্র মোঃ সুজন মিয়া (২৭) দুই সন্তানের জনকের সঙ্গে পাশ্ববর্তী ধলার-পাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের নাবালিকা কন্যা,শঠিবাড়ী বহুমুখী উচ্চ-বিদ্যালয়ের ৮ম-শ্রেনীর ছাত্রী (১৫) সঙ্গে দুর সম্পর্কের দুলাভাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
প্রেম ভালোবাসার সূত্র ধরে, ২৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১২ ঘটিকার সময় ঐ ছাত্রী সুজনের নিজ বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় এবং সুজনের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নিলে মাত্রাতিরিক্ত চেতনানাশক ঔষধ সেবন করে ঐ ছাত্রী নিজের হাতের বিভিন্ন জায়গায় ব্লেড দিয়ে কাটাছেঁড়া করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্হানীয়রা তাকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
বিষয়টি মিমাংসার উদ্দেশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের বাড়িতে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে, উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঐ ছাত্রী জানান, যে কোন মূল্য তিনি সুজনকে বিয়ে করতে চান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ঐ ছাত্রী তার বাবার সঙ্গে না গিয়ে পূনরায় বিয়ের দাবিতে সুজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে ঐ সার্লিশের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে স্হানীয় এক সাংবাদিককে মারধর এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে স্হানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে এসব নারীঘটিত মিমাংসার বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কোন সমাধান না হওয়ায় স্হানীয় লোকজন অস্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, ঐ ছাত্রীকে নিয়ে আমরা খুব টেনশনে আছি। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। উভয়পক্ষ কোন সমাধান না করায় ঐ ছাত্রী অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছে। কখন কি করে বলা যায়না।
অভিযুক্ত সুজনের বাড়িতে গেলে, বাড়ির গেইট তালাবদ্ধ থাকায় কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ঐ ছাত্রীর চাচা জানান, বাড়িতে গেলে ও মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। তাই সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার জানান, নাবালিকা মেয়ে, বিয়ের বয়স হয়নি,তাই তাকে বুঝিয়ে তার বাবার সঙ্গে পাঠিয়ে দিয়েছি। সংবাদকর্মীকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। সার্লিশে ঐ কিশোরীকে মারার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান ঢাকা মেইলকে জানান, এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি চতুর্থ দিনেও অনশন অব্যাহত রয়েছে।