মোঃ রমজান হোসেন,ময়মনসিংহ, হালুয়াঘাট (প্রতিনিধি)

হালুয়াঘাটের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে হালুয়াঘাট’ বিষয়ে হালুয়াঘাটের গাজিরভিটা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গ্রন্থ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২ অক্টোবর রবিবার সকাল ১১ টায় ভাষা সৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহ মাজারুল হান্নান স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ভাষা সৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহ মাজারুল হান্নান স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক এস. এ সারোয়ার জাহান সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজিরভিটা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোফাজ্জল হোসেন। বিশেষ অতিথি এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনামুল হক মন্ডল, শিল্পী সন্তু সাহা, মোঃ আতিক উল্লাহ, কমল ভদ্র। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা হার্সন সাংমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম, শরীফ মল্লিক প্রমুখ। উক্ত গ্রন্থের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেছেন শিল্পী সন্তু সাহা।

‘মুক্তিযুদ্ধে হালুয়াঘাট’ বইটির রচনা ও সংকলন করেছেন হালুয়াঘাট দর্পণ পরিষদের সম্পাদক, তরুণ লেখক মাহমুদ আবদুল্লাহ।

সীমান্তবর্তী এই উপজেলার মুক্তিযুদ্ধকালীন নানা ঘটনাসহ উল্লেখযোগ্য বিষয় বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অপারেশন ডিরেক্টরেট ম্যাপে “দ্যা গেট অব ঢাকা” হিসেবে হালুয়াঘাটকে উল্লেখ, ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর ঢাকার পশ্চাৎভূমি হিসেবে হালুয়াঘাটের অবদান, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিকালে মুধপুরের প্রতিরোধ যুদ্ধে হালুয়াঘাটের অবদান, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি সময়ে সৈয়দ নজরুল ইসলাম’সহ একাধিক জাতীয় নেতার হালুয়াঘাটে আগমন, মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই হালুয়াঘাট সংগ্রাম কমিটির প্রচেষ্টায় ভারতের অস্ত্র সহায়তা, ১১নং সেক্টরের প্রথম বিজয় এলাকা হালুয়াঘাটের তেলিখালী,১১ নং সেক্টরের প্রথম সম্মুখযুদ্ধ হালুয়াঘাটের বান্দরকাটা, হালুয়াঘাটের শতাধিক কিশোর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হালুয়াঘাটে জেনারেল নিয়াজীর পদার্পণ, হালুয়াঘাটে ৪ জন পাকিস্তানি সেনার কবর, একক স্কুল হিসেবে সারা দেশের সবচেয়ে বেশি হালুয়াঘাটের একটি স্কুল থেকে ছাত্রদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, মেহেরপুর মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে হালুয়াঘাট-ডালু সীমান্তে শরণার্থী গমন দৃশ্যের চিত্র স্থাপন। এ ছাড়া এমন আরো বহু অনন্য বিষয় হালুয়াঘাটের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। এ গ্রন্থে এসব বিষয়ের বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হালুয়াঘাটের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিতে বইটি অনেক সহযোগিতা করবে। তরুণ এই লেখক দীর্ঘ ছয় বছর ধরে গবেষণা, বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বইটি সাজিয়েছে। বইটির আগামী সংস্করণে আরো কিছু বিষয় সংযোজন ও পরিমার্জন করার আহ্বান জানান। ‘মুক্তিযুদ্ধে হালুয়াঘাট’ গ্রন্থ আগামী প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার মাইলফলক হবে।