জিসান সরকার বেনাপোল প্রতিনিধিঃযশোর কোতয়ালী থানাধীন ৯ নং আরবপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ বি-পতেঙ্গালী এলাকার সোহেল রানার ৪ বছরের শিশু কন্যা সানজিদা জান্নাত মিষ্টি’র লাশ উদ্ধার এবং হত্যাকারী আঞ্জুয়ারা(৪০) নামের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি)’র সদস্যরা।

যশোর জেলা ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,
যশোর কোতয়ালী থানাধীন ৯নং আরবপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ বি-পতেঙ্গালী সাকিনের সোহেল রানার মেয়ে ৪ বছরের শিশু কন্যা সানজিদা জান্নাত মিষ্টি নিজ বাড়ীর পাশে বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করাকালে নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ইং ০১/১০/২০২২ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ৬টার দিকে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডাইরী করে, যার নং-৫০।

এ ব্যাপারে মডেল থানা পুলিশ,জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)কে অবহিত করে। পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এঁর নির্দেশনায় ডিবি’র ওসির তত্ত্বাবধানে ডিবি’র এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে একটি টিম স্থানীয় অনুসন্ধান পূর্বক উক্ত এলাকার আঞ্জুয়ারা নামের এক মহিলাকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুন স্বেচ্ছায় স্বীকার করে যে, নিখোঁজ সানজিদাকে আপেল খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে তার বিল্ডিং ঘরে ডেকে নিয়ে তার বসতঘরের পূর্ব পার্শ্বের কক্ষে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ব আক্রোশে তার নিজের ব্রা ও গামছা দ্বারা হাত-পা বেঁধে ওড়না দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে এবং মুখের মধ্যে ওড়না ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতঃ হত্যার রহস্য গোপন করার নিমিত্তে মরদেহ তার বসত ঘরের সিড়িপথের নীচে রাখা চালের ড্রামের মধ্যে চাল দিয়ে ঢেকে রাখে। এছাড়াও আঞ্জুয়ারা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সানজিদার পরিবারের লোকজনদেরকে বাড়ীর পাশে পুকুরে তল্লাশী করার পরামর্শ দেয় এবং বিভিন্ন জায়গায় তাদের সাথেই খোজাখুজি করে। এরপর তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ডিবি ও থানা পুলিশ তাকে নিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিসহ শত শত জনতার সামনে ১লা অক্টোবর রাত ১১ টার দিকে কোতয়ালী মডেল থানাধীন বি-পতেঙ্গালী সাকিনে বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুন এর পাকা বসত বাড়ীর সিড়িপথের নীচে রাখা টিনের তৈরী চালের ড্রামের মধ্যে চালের নীচ থেকে বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুনের দেখানো ও নিজ হাতে বাহির করে দেওয়া মতে নিখোঁজ সানজিদা জান্নাত মিষ্টির মৃতদেহ উদ্ধার করে ডিবি ও থানা পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আঞ্জুয়ারা খাতুন জানায় যে, আঞ্জুয়ারা খাতুন ও তার কথিত স্বামী রেজাউল @ রেজা’র বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডের বিষয়ে (সানজিদার মা) শরিফা খাতুন অবগত থাকায় এবং বিভিন্ন সময়ে বিবাদীর বাকশক্তিহীন প্রতিবন্ধি ছেলে অপূর্ব হাসান (৭) এর সাথে ভিকটিম সানজিদা জান্নাত মিষ্টির হাতাহাতি করার সময় বিবাদীর ছেলেকে পাগল বলে গালি দেওয়ায় বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুন তার স্বামী রেজাউল @ রেজাসহ অজ্ঞাত ব্যক্তির পরামর্শে আপেল খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে তার বিল্ডিং ঘরে ডেকে নিয়ে ইং ০১/১০/২০২২ তারিখ বেলা ১২:০০ ঘটিকা হইতে ১৬:০০ ঘটিকার মধ্যে যেকোন সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ব আক্রোসে আমার মেয়ে নিখোঁজ সানজিদা জান্নাত মিষ্টি (৪) শিশু বাচ্চাকে বিবাদী তার নিজের ব্রা ও গামছা দ্বারা হাত-পা বেঁধে ওড়না দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে এবং মুখের মধ্যে ওড়না ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতঃ হত্যার রহস্য গোপন করার নিমিত্তে মরদেহ তার বসত ঘরের সিড়িপথের নীচে রাখা চালের ড্রামের মধ্যে রেখে চাল দিয়ে ঢেকে রাখে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানাঃ
১। আঞ্জুয়ারা খাতুন (৪০), পিতা-আকবর আলী, মাতা-মৃত জায়েদা বেগম, স্বামী-রেজাউল @ রেজা, স্থায়ী সাং-পুটখালী উত্তরপাড়া, থানা-বেনাপোল পোর্ট, বর্তমান ঠিকানা-বি-পতেঙ্গালী, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর।