
নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিকের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, হেনস্তা ও ডিলারশিপ বাতিলের হুমকির অভিযোগ এনেছেন বিএডিসি সার ও বীজ ডিলার শেখ জামিল আহমেদ। তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন শেখ জামিল আহমেদ। তিনি কালিয়া উপজেলার মহাজন বাজারের মেসার্স আরাফাত ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও দীর্ঘদিনের বিএডিসির সার ও বীজ ডিলার।
অভিযোগে জামিল উল্লেখ করেন, মালগুদাম জাত করার জন্য কৃষি কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। কিন্তু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক প্রতিবারই মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে হেনস্তা করেন এবং ডিলারশিপ বাতিলের হুমকি দেন। এমনকি তার ডিলারশিপ বাতিল করে একই বাজারের সামিউল ইসলামকে দেওয়ার শর্তে এক লাখ টাকা ঘুষ চান। সামিউল পরে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেলে ইভা মল্লিক তা ফিরিয়ে দিয়ে স্পষ্ট বলেন, “এক লাখের কম হলে ডিলারশিপ হবে না।” এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজও রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন জামিল।
তিনি আরও দাবি করেন, “আমি বিএনপি করি— এই কারণে বিগত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তা বলেছেন, আপনার ডিলারশিপ বাতিল করে আওয়ামী লীগপন্থিদের দেওয়া হবে। গুদাম পরিদর্শনে এসে তার পছন্দের লোকদের কাছে গোপনে সার বিক্রির নির্দেশও দেন। এতে রাজি না হওয়ায় আমার অ্যারাইভাল ও রেজিস্ট্রার খাতায় স্বাক্ষর দিতে গড়িমসি করেন।”
জামিল অভিযোগ করেন, ইভা মল্লিকের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং ডিলারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারে কৃষক ও ডিলাররা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এতে কালিয়া উপজেলার কৃষিখাতের উন্নয়ন থমকে গেছে। তিনি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অভিযোগে নাম আসা সামিউল ইসলাম বলেন, “কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক আমার কাছে ডিলারশিপের বিনিময়ে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে আমি ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেলে সেটি ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, এক লাখের কমে হবে না।”
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক বলেন, “জামিল বিএডিসির ডিলার হলেও মৌসুমি ব্যবসায়ী। ফেব্রুয়ারিতে চালানে স্বাক্ষর নিয়েছেন, মার্চে মাল তোলেননি। এপ্রিল-মে মাসে মাল তুলে নড়াইলে বিক্রি করেছেন। আমি বলেছি, নিজের ঘরে মাল তুলে কৃষকদের সার দিন। তাই তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।”
এ বিষয়ে নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জসীম উদ্দীন বলেন, “অফিসে ফিরে অভিযোগটি পড়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।”