
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা | ৬ জুলাই ২০২৫:
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন প্রগতিশীল শক্তির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দীর্ঘদিন তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জাতীয় প্রগতিশীল পার্টি (এনপিপি)। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ, দুর্নীতিবিরোধী ও পূর্ণ গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী এ দলটি দীর্ঘ প্রস্তুতি, মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম ও সাংগঠনিক ভিত্তি দৃঢ় করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের রাজনৈতিক যাত্রার ঘোষণা দিয়েছে।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যান ডি জি অপূর্ব, মহাসচিব মোশারফ হোসেন রুবেল এবং দপ্তর সম্পাদক রিফাত আহমেদ। ইতোমধ্যেই ২১ সদস্যের কোর কমিটি ও ১০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় আহ্বায়ক কমিটিও গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান দপ্তর সম্পাদক রিফাত আহমেদ।
এনপিপির নেতারা জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তাদের দল মাঠপর্যায়ে নানা মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ নানামুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে।
দপ্তর সম্পাদক রিফাত আহমেদ বলেন,
“আমরা এসেছি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে। ‘আসলাম, দেখলাম, চলে গেলাম’ এমন কোনো রাজনীতি নয় আমাদের। আগস্ট-পরবর্তী সময়ে বহু দল গজিয়ে ওঠায় মানুষের মনে যে ধান্দাবাজির ধারণা তৈরি হয়েছে, সেটি ভাঙতেই আমরা আত্মপ্রকাশে সময় নিয়েছি। এনপিপি নির্বাচনের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্য মাঠে থাকতে চায়।”
দলের চেয়ারম্যান ডি জি অপূর্ব বলেন,
“বাংলাদেশকে নতুন এক প্রগতিশীল রাজনৈতিক বাস্তবতায় নিতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, কিন্তু চেতনার নামে যারা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়, তারা জনগণের শত্রু হয়ে উঠেছে। এনপিপি সেই উদ্যোগ, যেখানে ব্যক্তি নয়, জনগণ হবে মূল। রাজনীতি হবে সেবার মাধ্যম, ক্ষমতার নয়।”
মহাসচিব মোশারফ হোসেন রুবেল বলেন,
“গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে শুধু নির্বাচনের দাবি যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন জনসম্পৃক্ত নেতৃত্ব ও স্বচ্ছ কাঠামো। আমরা সেই পথেই হাঁটছি। চাই তরুণরা রাজনীতিকে ঘৃণা না করে নেতৃত্বের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুক।”
নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রিফাত আহমেদ বলেন,
“আমরা নির্বাচন কমিশনের সকল বিধি মেনে নিবন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। শক্ত ভিত্তির ওপর সংগঠন দাঁড় করিয়ে গণমুখী রাজনীতি চালিয়ে যেতে চাই।”
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই জাতীয় পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে। পাশাপাশি তৃণমূলে মতবিনিময় সভা, কর্মশালা ও যুব ফোরামের আয়োজনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনপিপি তাদের বার্তা পৌঁছে দিতে সক্রিয় হয়েছে।
“স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা ঐক্যবদ্ধ”—এই মূল স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় প্রগতিশীল পার্টি এমন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চায়, যেখানে আস্থা, ন্যায়বিচার ও জনগণের অংশগ্রহণই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি।