স্টাফ রিপোর্টার :
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা ৭ নং জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপিতে নতুন এক নাম মুশফিকুর রহমান মেহেদী।
তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা বলে দাবি করেন। তার সম্পর্কে জানতে একদল সংবাদ কর্মী ছুটে যায় জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামে,যেখানে তার স্থায়ী বসত বাড়ি। উঠে আসে চোখ কপালে উঠার মত চাঞ্চল্যকর নানান তথ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি সূত্রে জানা যায়, মুশফিকুর রহমান মেহেদী পিতা মৃত-মজিবুর রহমান,দাদা মৃত-আঃ রহিম। আঃ রহিম ছিল ১৯৭১ সালের পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর তৈরি শান্তি কমিটির(পিস কমিটি)জয়নগর ইউনিয়ন সভাপতি। এই কমিটি পরিচালনা করতো রাজাকারদের। ১৯৭১ সালে মেহেদীর দাদা আঃ রহিম দাওকান্দি গ্রামের হিন্দু পাড়ায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে স্ব-শরীরে অংশগ্রহণ করে। যেই সময় মানুষ তিন বেলা খেতে পাইনি সেই সময় আঃ রহিম পান্তা ভাত খেতেন চিনি দিয়ে। দুর্গাপুর উপজেলার যুগিশো গ্রামের গণ হত্যার বিষয়ে দুর্গাপুর বাসি অবগত আছেন। এই হত্যাকাণ্ডে মেহেদীর দাদার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এলাকায় বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন ও লুটপাট করে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছিলেন মেহেদীর দাদা আঃ রহিম।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর মোহনপুর উপজেলা,মৌপাড়া গ্রামের মৃত- বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু খগেন চন্দ্র রায় (মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার) এর নেতৃত্বে মেহেদীর দাদা আঃ রহিমকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজা খুঁজি করে ধরে আনেন দাওকান্দি বিদ্যালয়ে । আঃ রহিম মুক্তি বাহিনীর কাছে নিজের সমস্ত অপরাধ স্বীকার করে পা ধরে ক্ষমা চান সেই সাথে নিজের জীবন ভিক্ষা চান। মুক্তি বাহিনী তাকে সাধারণ ক্ষমা করে জীবন ভিক্ষা দেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহনপুর উপজেলা মৌপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিভূতি ভূষণ দাস তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস তুলে ধরেন। গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্গাপুর উপজেলা জয়নগর ইউনিয়ন পারিলা গ্রামের আঃ রহিম পিস কমিটির সভাপতি ছিল। সেই সময় আঃ রহিম নিরিহ মানুষের উপর অনেক নির্যাতন করেছে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর। দাওকান্দি ও যুগিশোর ঘটনা তিনি তুলে ধরেছেন। আঃ রহিম কে দেশ স্বাধীনের পর দাওকান্দি স্কুলে ধরে আনা হয়েছিল। সে ভুল স্বীকার করে পা ধরে ক্ষমা চাইলে তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল।
সূত্র বলছে, মেহেদীর পিতার মৃত্যুর পর এবং তার বিয়ের দাওয়াতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে দাওয়াত করা হয়েছিল। এমনকি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করায় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের দ্বারা। তার শশুর মোঃ আক্কাস আলী (আঁকা) পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। সেই সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সঙ্গে ছিল তার দহরম-মহরম সম্পর্ক। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে এখন সে বিএনপি নেতা।
জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুশফিকুর রহিম মেহেদী অতীতে কোনো দিন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না এমন কি তার পিতা বিএনপির রাজনীতি করতেন এমনটা জানা নাই। বিএনপির কিছু কথিত মৌসুমী নেতারা এমন হাজারো মেহেদী তৈরি করেছে তাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। এরা হাইব্রিড দালাল, এরা দলে অনুপ্রবেশ কারী।
এই নিয়ে মেহেদীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পরবর্তীতে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে বিভিন্ন ভাবে সমঝোতার চেষ্টা করেন।