✍️গাজী আব্দুল আলীম, খুলনা জেলা প্রতিনিধি:-আমার সেজ চাচী মা মরহুমা মনোয়ারা সুলতানা গতকাল ৪ আগস্ট সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার শবদেহ ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসায় গোসল সম্পন্ন করে ছোট কন্যা মিরার বাসায় রাখা হয়।
ঢাকায় অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা খবর পেয়ে শেষবারের মতো তাকে দেখতে ছুটে আসেন। রাত প্রায় এগারোটার পরে মরহুমাকে কফিনে আবৃত করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকাস্থ বাসা থেকে খুলনার রূপসা থানার রাজাপুর বাজারসংলগ্ন নিজ বাসভবনে আনা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে সেনের বাজার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, মরহুমা মনোয়ারা সুলতানা রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দীর্ঘদিন সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং অবসর গ্রহণ করেন প্রায় দেড় দশক আগে। অবসরের পর তিনি তার সন্তানদের সাথে বিভিন্ন স্থানে পারিবারিকভাবে বসবাস করতেন।
মৃত্যুকালে তিনি ২ পুত্র, ২ কন্যা, ২ পুত্রবধূ, ২ জামাতা, নাতি-নাতনি, পুত্র-পুত্রীসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার বড় ছেলে প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান কাজল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। তিনি অবসরের পর বেশিরভাগ সময় বড় ছেলের বাসায় অবস্থান করতেন। মাঝেমধ্যে রাজাপুরের নিজ বাড়িতে ছোট ছেলে আরিফুল ইসলাম বাদলের পরিবারের সাথে সময় কাটাতেন। আরিফুল ইসলাম বাদল তেরখাদা উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত।
তার বড় মেয়ে ডরোথী একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন এবং ছোট মেয়ে মিরার স্বামী জনাব মেহেদী সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।
মরহুমা মনোয়ারা সুলতানা জীবদ্দশায় পবিত্র মক্কা নগরীতে তার বড় ছেলে প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান কাজলের সাথে হজব্রত পালন করেন।
তার স্বামী জি.এম. আব্দুর রশিদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, যিনি বহু বছর পূর্বেই ইন্তেকাল করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে মরহুমা ছিলেন একজন সাদা মনের আদর্শ শিক্ষিকা। তিনি জীবনের প্রায় ৩৫ বছর একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং তার হাতে গড়া বহু ছাত্রছাত্রী আজ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন। জীবদ্দশায় তাকে কখনো বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।
তার মৃত্যুতে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার পরিবার তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।