ক্রাইম রিপোর্টার : মাদকের দ্বন্দ্বে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি
নেশার ভয়াল থাবায় যুবসমাজ ধ্বংসের মূলহোতা শাহাদাত তার ছটো ভাই শামীমসহ ওরা ৯ জন কারা ? এক পারিবারের কব্জায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাদক সিন্ডিকেট: একটি পরিবারের হাতেই জিম্মি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাদক সিন্ডিকেট। মা, ছোট ভাই, স্ত্রী ও প্রধান সহকারীকে নিয়ে পুরো জেলার মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা শাহাদাত হোসেন ওরফে ডাইল শাহাদাত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ আটকের পরেও জেল থেকে বেরিয়ে আসার পরেও থেমে নেই তাদের মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম। ভারত থেকে তাঁরবেড়া পার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ সারাদেশে হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা সরবরাহ করে শাহাদাতের সক্রিয় সিন্ডিকেট ৯ জন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ি হওয়ায় মাদক চোরাচালানের সবকিছুই নখেদর্পনে শাহাদাত হোসেনের। দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সাথে যুক্ত থাকায় এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা এখন সে। ভারত থেকে পাচার করে নিয়ে এসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ সারাদেশে খুচরা পাইকারী ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে শাহাদাত। শাহাদাতের হাতে পৌঁছে যায় প্রতি সপ্তাহে ভারত থেকে আসা ৫০০ গ্রাম হিরোইন যা বন্টন হয় লাল কালারের হানডেট প্রাইভেট কারে ৯ জনের হাতে।
জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত থেকে ভারতীয় ফেনসিডিল ও হিরোইন এনে পুরো জেলাসহ দেশব্যাপী সরবরাহে মাদকের ভয়াল থাবায় যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক সিন্ডিকেট চালাতে নিজের বাড়িতেই অস্থায়ী ফেনসিডিল, হিরোইন কারখানা গড়ে তুলেছেন শাহাদাত হোসেন। ভারত থেকে ফেনসিডিল আসার পর তার বাড়িতে আবারো সকল বোতল খোলা হয়। এরপর নতুন করে বোতলজাত হয়। এতে ভারতীয় ১০০ বোতল ফেনসিডিল খুলে তা নেশাজাতীয় ভেজাল অ্যালকোহল মিশিয়ে ১৪০ বোতলে রূপান্তরিত করা হয়। ভেজাল এ্যালকোহল মেশানোর কারনে এসব ফেনসিডিলে তীব্র নেশাগ্রস্ত হয়ে তৃপ্তি মিটাচ্ছে সেবনকারীরা। আর এতেই অন্যান্য মাদক সিন্ডিকেটের তুলনায় ভালো দাম ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে শাহাদাতের নতুন বোতলজাত করা ফেনসিডিল।
একাধিক সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন একটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হওয়ায় এবং ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা গ্রামে বাড়ি হওয়ায় সুবাদে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় শাহাদাতের জন্য। অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে নিরীহ ব্যক্তিদের ফাঁসিয়ে মাদক মামলা দিয়ে কারাগার বহু মানুষ, তাকে নিয়ে মুখ খুললেই মামলার আতঙ্ক? তবে তার ভারত থেকে সকল ফেনসিডিল ও হেরোইন আসে রাতের অন্ধকারে তারবেঁড়া পার হয়ে। এরপর শাহাদাতের বাড়িতে নতুন বোতলজাত করে তার ছোট ভাই শামীম অন্যদিকে তার ডান হাত সেকেন্ড মূল হোতা ন্যাংড়া শামীম। সিন্ডিকেটের মূলহোতা শাহাদাত প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও অংশীদারত্বে বেপরোয়া ও তার মূল উপদেষ্টা হিরোইনের প্যাকেটজাতকরণ হাজারবিঘি ভোলামারি গ্রামের ন্যাংড়া শামীম।
স্থানীয়দের দাবি, তাদের প্রকাশ্যে মাদক দ্বন্দ্বের কারনে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা। এসব বিষয়ে স্থানীয় সচেতন নাগরিক এ এম ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, শাহাদাত একজন কুখ্যাত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে বর্তমান কোর্টের ওয়ারেন্ট সহ অনেকগুলো মাদক মামলা রয়েছে যার ওয়ারেন্ট প্রসেস নং ৩৩৮ /২০২৫ তাং ৬/ ৮ /২৫ শুধু শাহাদাত নয়, তার পুরো পরিবার মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। সকল সদস্যদের নামে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। যা পুলিশের রেকর্ড অনুসন্ধান করলেই পাওয়া যাবে। তবুও এই পুরো পরিবারটি কেন ? ধরাছোঁয়ার বাইরে? প্রশ্ন তুলে ধরেন জেলার সচেতন নাগরিক, জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে? একটার পর একটা মামলা হয়, কিন্তু বের হয়ে এসে আবারোও একই কাজ শুরু করে তাহলে কি প্রশাসন তাদের কাছে জিম্মি ?