আবুনাঈম রিপন, স্টাফ রিপোর্টার:- আজ ২০ আগস্ট, বুধবার ২০২৫ খ্রি.; মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরসন্তান ও দেশের সর্বোচ্চ বীরত্বসূচক খেতাবপ্রাপ্ত শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানের করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণার্থী রশিদ মিনহাজের কাছ থেকে একটি টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে পাকিস্তানের থাট্টায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। পরবর্তীতে তাঁর মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় অর্ধমাইল দূরে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মতিউর রহমান বিমানবাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে কর্মরত ছিলেন।
১৯৪১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকার আগাসাদেক রোডের একটি বাড়িতে তাঁর জন্ম। পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে। প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলে। পরবর্তীতে ভর্তি হন সারগোদার বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন তিনি এবং ১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন।
কমিশন প্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে যোগ দেন। সেখানেই টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন। এমনকি ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে যে বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে একমাত্র বাঙালি পাইলট হিসেবে অংশ নেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব “বীরশ্রেষ্ঠ”উপাধিতে ভূষিত করে।
পাকিস্তান সরকার প্রথমে তাঁর মরদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে দাফন করে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর, ২০০৬ সালের ২৪ জুন তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ২৫ জুন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।
দেশের এই মহান আত্মত্যাগী সন্তানের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে রইল বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।