শৈহ্লাচিং মার্মা, রুমা প্রতিনিধি (খাগড়াছড়ি): শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে বান্দরবানের রুমা বাজারে নেই উৎসবকে ঘিরে বেচাকেনার কোনো আমেজ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম একেবারেই নেই। দোকান মালিক ও কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
কাপড় ব্যবসায়ী মোঃ মোর্শেদ (৪৫) ও ওসমান বলেন, “দুর্গোৎসব আসন্ন হলেও দোকানে ক্রেতা আসে না, বেচাকেনা না হলে চলবে কেমন করে?”
মা স্টোরের স্বত্বাধিকারী মিটু দাশ জানান, “শাড়ি কিংবা থামিং-লুঙ্গি কিছুই বিক্রি হচ্ছে না। ক্রমাগত ঋণ বেড়ে যাওয়ায় খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।”
কাপড় ব্যবসায়ী সাধন বড়ুয়া বলেন, “গত বছর এই সময় দোকানে এত ভিড় ছিল যে ভাগিনা আর স্ত্রীকেও সহযোগিতা করতে হয়েছে। এখন দোকানে আমি একাই বসে আছি, ক্রেতা নেই। ব্যবসা চালাতে গিয়ে চার থেকে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ হয়ে গেছে।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সামনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমাদের বৃহস্পতি ও সোমবারের বাজারে বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে।
ইত্যাদি স্টোরের ম্যানেজার খোকন জানান, “সকাল ১০টা ও বিকাল ৩টার পর কিছুটা বেচাকেনা হয়। বিশেষ করে ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীরা জর্জেট, লিলেন, পপলিন কাপড় ও শাড়ি কিনছেন।”
শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি রাজিব দাশ বলেন, “শনিবার থেকে রুমায় টানা তিন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।”
স্থানীয় সপ্নারাণী (৪২) জানান, “স্বামীর এখন কোনো ব্যবসা নেই, আয় রোজগার নাই। নিজের জন্য কিছু না কিনে শুধু মেয়ের জন্য জামা কাপড় কিনেছি।”
রুমা বাজার সংলগ্ন লেমুঝিরি পাড়ার বাসিন্দা সুভাষ সরকার জানান, পরিবারে চারজন সদস্যের মধ্যে শুধু ছেলে-মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করেছেন। নিজের ও স্ত্রীর জন্য কিছুই কেনেননি।
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব এবং আগামী ৬ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা বা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে পালিত হবে।
অন্যদিকে হিন্দু ও বৌদ্ধ দুই সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে চলছে উৎসবের আমেজ। পাশাপাশি সরকারি ছুটির কারণে পর্যটকদের আগমনের আশায় ট্যুরিস্ট গাইড সদস্যরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছেন।