আবুনাঈম রিপন, স্টাফ রিপোর্টার:- নরসিংদীর পৌর শহরের আরশিনগর এলাকায় চাঁদাবাজ ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আনোয়ার হোসেন শামীম। ৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে আরশিনগর রেলক্রসিং থেকে প্রায় ৪০ গজ দূরে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী পৌর শহরের রাস্তাগুলোতে চলন্ত যানবাহন থামিয়ে কয়েক মাস ধরে একদল চাঁদাবাজ সড়কে চাঁদা আদায় করে আসছে। এসব চাঁদাবাজের কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হতো। যানজট নিরসনের উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ পুলিশের একটি দল আরশিনগর ও এর আশপাশে টহল দেওয়ার সময় দেখেন, সড়কের উপর ৩ থেকে ৪ জন চাঁদাবাজ চলন্ত গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা আদায় করছে।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুইজনকে হাতেনাতে আটক করে সড়কের পাশে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। তখন চাঁদাবাজদের পক্ষে আরও ৩০ থেকে ৪০ জন লোক জড়ো হয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আটককৃত দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় চাঁদাবাজদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পুলিশের অন্য সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, "আমি আমার ফোর্সসহ শহরের বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কিছু লোক শহরের আরশিনগর মোড় থেকে প্রায় ২০ থেকে ৫০ গজ দূরে চলমান যানবাহন থামিয়ে চাঁদা আদায় করছিল। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই এটা তো অবৈধ। হাইকোর্ট ও স্থানীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী এটি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইনবিরোধী।’ এমন সময় ৩০ থেকে ৪০ জন লোক এসে বাধা সৃষ্টি করে, প্রথমে আমাকে কিল ঘুষি মারে এবং লাথি দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। এতে আমি মাথায় আঘাত পাই। আমাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমি একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে এ ধরনের বেআইনি কাজ চলতে দিতে পারি না।"
সমাজের সুধীজনরা বলছেন, জেলা পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা যদি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থাটা কেমন হতে পারে তা সহজেই বোঝা যায়। এটি নির্দেশ করে যে নরসিংদীর জেলায় বর্তমান আইনশৃঙ্খলা কী অবস্থায় রয়েছে। দিন দিন সাধারণ মানুষ এসব অপরাধীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। অপরাধ রোধ ও অপরাধীদের নির্মূল করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। কঠোর হস্তে দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা না হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি আরও বাড়তে পারে বলে সচেতন মহল ধারণা করছেন।