রুমা প্রতিনিধি :
বান্দরবানের রুমায় স্কুল ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় এজাহারভুক্ত পলাতক দুই আসামী আদালতে স্বেচ্ছাআত্মসমর্পণ করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিয়োজিত আইনজীবী উবাথোয়াই স্বেচ্ছা আত্মসমর্পণ পূর্বক জামিন চাইলে
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত বিচারক মো: ইমরান জামিন না মঞ্জুর করে আসামীদ্ব’কে
জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
আসামীদ্বয় হলে- চহাই মার্মা ও ক্যওয়াই সাই মার্মা। দলবদ্ধ ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আত্মসমর্পণকারী আসামিদ্বয় সহ এজাহারভুক্ত আসামী পাঁজন-ই জেল হাজতে দেওয়া হল।
তবে এই ঘটনাটির ঘামাচাপা রাখতে সামাজিক সালিসি বিচার আয়োজনকারীদের মধ্যে থেকে কাউকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে বিচারের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়নি এখনো।
পাড়াবাসী ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, চলতি আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রাইভেট থেকে ফেরার পর ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধ পাঁচ জন মিলে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই ছাত্রী পাইন্দু হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ালেখা করত। দলবদ্ধ ধর্ষকেরাও পাইন্দু হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা হওয়ায় পাড়ার কারবারী হেডম্যান ও মেম্বার সহ ধর্ষকদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে না দিয়ে প্রভাব খাঁটিয়ে পাড়ায় সামাজিক সালিসি বিচার আয়োজন করে।
ওই বিচারে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার অজুহাতে ধর্ষণকারীদের দায়মুক্তি দেয়া হয় এবং চিকিৎসা করবার নামে ভুক্তভোগীকে ঘরে বন্দী করে- সামাজিক বিচারকেরা।
এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহল প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ধর্ষক ও সামাজিক সালিসি বিচার আয়োজকদের
গ্রেফতারের দাবি উঠে- বিভিন্ন মহল থেকে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১৯ আগস্ট রুমা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহওয়ার্দীর
নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষককে আটক করতে সক্ষম হয় এবং জেল হাজতে প্রেরণ করে। তখন সামাজিক সালিসি বিচারকদের সহযোগিতায় দুইজন পালাতে সক্ষম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। একই সাথে সামাজিক বিচারকদের রক্ষা করতে পাড়াবাসিকে চাঁদা দিতে চাপ প্রয়োগ করার লক্ষ্যে ২৪ আগস্ট রাতে এক বৈঠক আয়োজন করা হয়। সেই বৈঠকে চাপিয়ে দেয়া চাঁদা দিতে অনেকেই তা মেনে নিতে পারেনি। ২৬ আগস্ট আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে পাইন্দু হেডম্যান পাড়ায় মতবিনিময় মিলিত হন- রুমা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। পলাতক ধর্ষকদের ধরিয়ে দিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে বলা হয়। পরে ভুক্তভোগী পরিবার সদস্যদের সাথেও কথা বলেন জোন কমান্ডার।
রুমা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী ওই মতবিনিময় সভায় হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আসামিকে ধরতে সহযোগিতা না করলে পাড়াবাসী সবার জন্য ভালো হবে না। এতে ঠেলার নামে বাবাজি! আর কথার আঁটে টাইগার বামে’ । পলাতক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ মধ্য দিয়ে সত্যের রূপ নিলো সমাজে প্রচলিত এ বাক্য।
আত্মসমর্পণকারী আসামীর চাচা ক্যসাপ্রু মুঠোফোনে জানিয়েছেন, বান্দরবান জেলা সদরে এক আইনজীবী এর মাধ্যমে তার ভাগিনা সহ ধর্ষণের মামলায় দুই আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করিয়েছেন।