জুয়েল আহমেদ : আজ ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি,৬ই আশ্বিন,১৪৩২ বঙ্গাব্দ,শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার শুভারম্ভ। দেবী দুর্গার পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ।এই মহালয়ার মধ্যদিয়েই দেবী দুর্গার পিতৃলোক থেকে মত্যলোকে আগমন ঘটে এবং দেবী পক্ষের সূচনা হয় এবং মন্ডপে মন্ডপে দুর্গাপূজা উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায়। দেবী দুর্গা এই দিন পিতৃপক্ষ হতে অবতরণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। শাস্ত্রমতে মহালয়া হচ্ছে একটি অমাবস্যা তিথি,এ তিথিতে সাধারনত পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ তর্পণ করা হয়। এ দিন তর্পণ করলে পিতৃপুরুষরা নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে আমাদের আর্শিবাদ প্রদান করেন। এছাড়া মহালয়ার দিনে দেবী দূর্গার বোধন করা হয়,বোধন অর্থ জাগরণ। তাই মহালয়ার পর দেবীপক্ষের প্রতিপদে ঘট বসিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সুচনা করা হয়।
শ্রাবন থেকে পৌষ ছয় মাস দক্ষিনায়ণ,দক্ষিণায়ণ দেবতাদের ঘুমের কাল। তাই বোধন করে দেবতাদের জাগ্রত করা হয়। মহালয়ার পর প্রতিপদে যে বোধন হয় সে সময় সংকল্প করে দুর্গাপূজার আয়োজন চলে। একে বলে কল্পরম্ভা, যদিও ষষ্ঠি থেকে পূজার প্রধান কার্যক্রম শুরু হয় তাই বলা হয় ষষ্ঠাদিকল্পরম্ভা। এবং সপ্তমী থেকে বিগ্রহতে। প্রতিপদ থেকে শুধু ঘটে পূজো ও চন্ডী পাঠ চলে।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঐতিহ্যগতভাবে দেবীমাহাত্ম্যম্ শাস্ত্র থেকে স্তোত্র পাঠ করতে মহালয়ার দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে। মহিষাসুরমর্দিনী নামে পরিচিত গান এবং মন্ত্রগুলির শোনার জন্য প্রত্যেক বাঙালি পরিবার ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে। এটি দেবী দুর্গার জন্ম এবং অসুর রাজা মহিষাসুরের উপর তাঁর চূড়ান্ত বিজয়ের বর্ণনা দেয়। তারা পিতৃপক্ষে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে ‘জলদান’ বা তর্পণ করা হয় এবং পরলোকগত পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মহালয়ার এই দিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য তুলে ধরতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে যেখানে দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধ,রামচন্দ্রের চক্ষু দান,দেবী দুর্গার অকাল বোধন সহ অন্যান্য বিষয় গুলো তুলে ধরা হয়।