নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- বগুড়ায় ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় শাকিল আহম্মেদ নামে এক অটোভ্যান চালককে জেলা সেচ্ছাসেবক দল নেতা জিতু বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
শনিবার (১৪ জুন) বিকালে শহরের ফুলবাড়ি এলাকায় করতোয়া নদীর নয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নিহত শাকিল আহম্মেদ (৪০) বগুড়া শহরের শিববাড়ি শাহী মসজিদ লেনের মৃত হানিফের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে শহরের এক ভাড়া বাসায় থাকেন।
স্বজনদের অভিযোগ, বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ জিতু ও তার সহযোগী মতিকে আটক করেছে।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শহরের শিববাড়ি শাহী মসজিদ লেনে পরিবার নিয়ে রানা নামের এক ব্যক্তির বাসায় ভাড়া থাকেন শাকিল। সম্প্রতি তার কিশোরী মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন একই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জিতু। এতে রাজি না হওয়ায় তার সঙ্গে জিতুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে জিতুর সঙ্গে শাকিলের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে শাকিল ছুরিকাঘাত করলে জিতুর হাত কেটে যায়। এরপর বাড়িতে এসে শাকিল লুকিয়ে ছিলেন। বিকাল ৩টার দিকে জিতুর নেতৃত্বে তার সহযোগী মতি, মোমিদুল, বিপ্লব, সুমনসহ একদল যুবক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে শালিকের বাসায় আসেন। তারা মারধর না করার আশ্বাস দিয়ে শাকিলকে ধরে ফুলবাড়ি এলাকায় করতোয়া নদীর নয়াঘাট এলাকায় নিয়ে যান।
সেখানে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রেখে যান। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে সন্ধ্যা ৬টায় চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জোবায়ের বলেন, ‘শাকিলের ১৪ বছরের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন একই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী জিতু। কিন্তু মেয়ের বয়স কম হওয়ায় শাকিল বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে দুজনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে দুপুরে বাগবিতণ্ডা হলে জিতুকে মারধর করেন শাকিল। প্রতিশোধ নিতে জিতু ও তার সহযোগীরা শাকিলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মারপিট করলে মারা যান।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বসির বলেন,হত্যায় জড়িত থাকায় জিতু ও তার সহযোগী মতিকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
নিহত শাকিলের বোন জানিয়েছেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার আগেই নেতাকর্মীরা বাড়াবাড়ি শুরু করেছেন। জিতু বাড়ি থেকে আমার ভাইকে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা সরকারের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।