প্রকৌশলী মোঃ কাওছার আলী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :- দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে শুরু হয়েছে সাতক্ষীরা থেকে ভেটখালি পর্যন্ত সড়মক সংস্কার ও বর্ধিতকরণের কাজ। বহু বছর ধরে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। ফলে এ পথে সুন্দরবন ভ্রমণ প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে এবং পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকে। অথচ দেশের একমাত্র স্থলপথে সুন্দরবনে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে সাতক্ষীরা দিয়েই।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজের সাথে জেলা নাগরিক কমিটির এক প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। এসময় তাঁরা কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত কাজ শুরু ও নির্ধারিত সময়ে শেষ করার জন্য অনুরোধ জানান। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল। উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হেনরী সরদার, উদীচী সাতক্ষীরার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলি নুর খান বাবুল এবং অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাশ।
প্রকল্পের কাঠামো :
সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের এই বৃহৎ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৬২.৩২৫ কিলোমিটার। লাবনী মোড় থেকে ভেটখালি পর্যন্ত সড়কটিকে ছয়টি ভাগে ভাগ করে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ভাগ হলো—
১. লাবনী মোড় থেকে আলিপুর চেকপোস্ট
২. আলিপুর চেকপোস্ট থেকে পারুলিয়া গরুর হাট
৩. পারুলিয়া থেকে নলতা হাদীপুর
৪. হাদীপুর থেকে কালিগঞ্জ ফুলতলা
৫. কালিগঞ্জ ফুলতলা থেকে শ্যামনগর সরকারি মহসিন কলেজ
৬. মহসিন কলেজ থেকে ভেটখালি।
প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ঠিকাদারের লেস কমিশন বাদে ৫৮২ কোটি টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করছেন তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—
মইনউদ্দীন বাঁশি লিমিটেড (দুই ভাগ)
বাবু পাটোয়ারী, যশোর (মইনউদ্দীনের অংশীদার হিসেবে দুই ভাগ)
জহুরুল লিমিটেড, মেহেরপুর (দুই ভাগ)।
কাজের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ :
ইতোমধ্যে সড়কের দুই পাশে জলাশয় ভরাট ও কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ।
প্রকল্পটির কার্যাদেশে বলা আছে, ৩০ জুন ২০২৬ সালের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। যদিও প্রকল্পের মোট মেয়াদ পাঁচ বছর, ইতোমধ্যেই তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।
স্থানীয় মানুষ ও নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা—এবার যাতে আর দীর্ঘসূত্রিতা না হয়। কারণ, সড়কটি শুধু সাতক্ষীরা জেলার নয়, বরং সুন্দরবনভিত্তিক পর্যটন, অর্থনীতি ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
“সাতক্ষীরা–ভেটখালি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি জানতে জেলা নাগরিক কমিটির নেতারা গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর, বিকেল চারটায় সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজের সাথে কাজের অগ্রগতি বিষয়ে সাক্ষাৎকালে এসব তথ্য জানা যায়। নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলাপকালে আরও উপস্থিত থেকে তথ্য সরবরাহ করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের এস ও রাফিউজ্জামান।