নিজস্ব প্রতিবেদক:- আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে রাজনৈতিক তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা এখন এক কণ্ঠে যে নামটি উচ্চারণ করছেন— তিনি হলেন নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, সিংড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তরুণ ও উদীয়মান নেতা দাউদার মাহমুদ। দলের অভ্যন্তরে যেমন, তেমনি সাধারণ মানুষের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছেন প্রত্যাশার প্রতীক।
তিনি ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তিনি বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। নিজ পরিবারের মায়া ত্যাগ করে তিনি দলের পেছনে ছুটেছেন দিনের পর দিন। এমনকি মিথ্যা মামলায় কারাগারে থেকেও তিনি দল থেকে পিছু হটেননি।
সিংড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি এক পরিচিত মুখ। শুধু দলীয় রাজনীতি নয়, সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা সহায়তা ও প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়ানো— এসব ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, “আমরা এমন একজন নেতা চাই, যিনি জনগণের কণ্ঠস্বর হতে পারেন, যিনি রাজনীতি করেন মানুষের জন্য। দাউদার মাহমুদ সেই মানুষ।”
সিংড়া উপজেলার অনেকেই জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা দাউদার ভাই উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের জনগণের নিয়মিত খোঁজখবর নেন। অসুস্থ, বন্যাদুর্গত বা বিপদে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি।
গত এক দশকে সিংড়ায় বিএনপির সংগঠন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দাউদার মাহমুদের নেতৃত্বে নতুন উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। তিনি যুবদল ও ছাত্রদলকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন, নিষ্ক্রিয় ইউনিটগুলোকে সক্রিয় করে মাঠে ফিরিয়ে আনেন।
স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মতে, “দাউদার মাহমুদ এমন একজন সংগঠক, যিনি তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন, আবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও আস্থা দিতে পারেন।”
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাজনীতি ছাড়াও দাউদার মাহমুদ সামাজিক কাজেও অগ্রগামী। শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ, দরিদ্র পরিবারের চিকিৎসা সহায়তা কিংবা করোনাকালে খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ— সবক্ষেত্রেই তাঁর সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে।
সিংড়া শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, “অনেকে রাজনীতি করেন ক্ষমতার জন্য, কিন্তু দাউদার ভাই রাজনীতি করেন মানুষের জন্য। এই কারণেই তিনি সিংড়ার অন্য নেতাদের চেয়ে আলাদা।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া আসনে দাউদার মাহমুদসহ চারজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম দাউদার মাহমুদ। তৃণমূলের নেতারা বলছেন, “আমরা এমন নেতা চাই, যিনি মাঠে ছিলেন, জনগণের পাশে ছিলেন, আর দলে বিভাজন নয়— ঐক্য আনবেন।”
সম্প্রতি এক মতবিনিময় সভায় দাউদার মাহমুদ বলেন,
“রাজনীতি আমার কাছে ক্ষমতার নয়, এটি জনগণের সেবা করার এক মহৎ সুযোগ। আমি চাই সিংড়ার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে।”
নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা বর্তমানে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এক শীর্ষ নেতা এই আসনে পরপর কয়েকবার নির্বাচিত হয়েছেন। তবে স্থানীয় ভোটারদের অভিযোগ— “উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু জনসম্পৃক্ততা কমে গেছে।”
এই সুযোগে বিএনপি মাঠে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে, আর দাউদার মাহমুদ হচ্ছেন সেই পুনর্জাগরণের মুখ।
দাউদার মাহমুদ রাজনীতি ও ব্যক্তিজীবন— দুই ক্ষেত্রেই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী। বিএনপির এক জেলা নেতা বলেন, “তাঁর মতো তরুণ, পরিশ্রমী ও নিষ্ঠাবান নেতা এখনকার রাজনীতিতে বিরল। তাঁর কারণে তরুণ প্রজন্ম আবার রাজনীতিতে আগ্রহী হচ্ছে।”
চলনবিলের বিস্তীর্ণ জনপদে এখন একটাই কথা—
“এইবার যদি দাউদার ভাই প্রার্থী হন, তাহলে মাঠে নামব সবাই।”
তৃণমূলের এই স্পষ্ট বার্তা শুধু একজন ব্যক্তিকে ঘিরে নয়; এটি পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা, দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও নতুন নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাসের প্রতিফলন।
এখন দেখার বিষয়— কেন্দ্রীয় বিএনপি কি সেই জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাউদার মাহমুদকে মনোনয়ন দেয় কিনা। যদি মনোনয়ন দেয়, তবে সিংড়ার রাজনৈতিক ময়দানে শুরু হতে পারে এক নতুন লড়াই, যেখানে তরুণ নেতৃত্ব ও তৃণমূলের ঐক্য মিলবে একই স্রোতে।