আজিজুর রহমান মুন্না , সিরাজগঞ্জঃ- সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের ভাঙ্গাবাড়ি (সয়াগোবিন্দ) ও সর্দারপাড়া (দিয়ারধানগড়া) এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলমান উত্তেজনা ও মারামারির প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে যৌথবাহিনী গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয় সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের একটি ইউনিট। অভিযানে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরাও অংশ নেন।
গত কয়েকদিন ধরেই এলাকাটিতে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বাড়িঘরে হামলা করে দেশীয় অস্ত্র, হেলমেট, লাঠি-সোঁটা, বাটল দিয়ে রড কাটা, কাচের গুটি নিক্ষেপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ মহড়া করেছে বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় চরম উদ্বেগে ছিলেন সাধারণ মানুষের মধ্যে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই যৌথবাহিনীর এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে ১৭ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বেশ কিছু
দেশীয় অস্ত্র, হেলমেট, লাঠি-সোঁটা, রড ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙাবাড়ি ও সর্দারপাড়া এলাকায় দুটি গ্রুপ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়ায়। সম্প্রতি তা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। একাধিকবার সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনীর অভিযান কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকতে হতো। দোকানপাট বন্ধ, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগত। এখন মনে হচ্ছে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।”
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বার্থে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে। অপরাধী যেই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেসুর রহমান। তিনি জানান, পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর দাবি, শুধু তাৎক্ষণিক অভিযান নয় এ ধরনের উত্তপ্ত এলাকাগুলোর স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে চাই ধারাবাহিক নজরদারি ও আইন প্রয়োগ।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর এক সদস্য বলেন, “যেখানেই জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, সেখানেই আমাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।