ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
মোঃ নাজিম উদ্দিন
চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে ফটিকছড়ি পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলে সড়ক ও জনপদ (সওজ) কার্যালয়ের প্রবেশ মুখ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে দুর্গন্ধে পুরো এলাকা অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে। এসবের উৎকট দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন লোকজন। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এসব ময়লা অপসারণ করা হবে।
রবিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বিবিরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসব ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সড়ক ও জনপদ (সওজের) ফটিকছড়ি সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে ফেলে রাখা এসব ময়লার দুর্গন্ধে সড়কে যাতায়াতকারীরা নাকমুখ চেপে চলাচল করেন। ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যেতেই দুর্গন্ধে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। সড়ক ধরে স্থানীয় মসজিদে যাতায়তকারী মুসল্লী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এসব আবর্জনা বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে বিষাক্ত বর্জ্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু পৌরকর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকার লোকজন ও পথচারীরা নানা কটু কথা বলছেন। ময়লার ভাগাড় টপকিয়ে কিভাবে সওজ কর্মকর্তারা অফিস করছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন
পৌরবাসীর অভিযোগ, সেখান থেকে প্রতিনিয়ত যে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে তাতে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি পথচারীদের নাকে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়। তাছাড়া পাশেই রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কার্যালয়। রযেছে বিবিরহাট বাজার ও বাসস্টেশন। দুর্গন্ধে আশপাশের অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বাসস্টেশন সুধিন্যে জামে মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী আক্তারুজ্জামান নূর বলেন, ‘আবর্জনাগুলো নিয়মিত থাকায় মসজিদে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত আমরা দুর্গন্ধ পোহাচ্ছি। যা আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। প্রশাসনের বড় বড় কর্তা-ব্যক্তিরা এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। অথচ কেউ কোন ব্যবস্থা নেয় না।’
পৌরসভার বাসিন্দা আবু ইউসুফ বলেন, ‘এখানে ময়লা ফেলায় পরিবেশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কারও পক্ষে স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিয়ে এ রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়। আমরা নাক বন্ধ করেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করি। আমরা পৌরসভায় বার বার বলেও কোনো সমাধান পাইনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো.কাউসার হোসেন বলেন, ‘রাস্তার পাশে জওজের সমানে খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের মাঝে নানা ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, আবাসিক এলাকা থেকে দূরে কোনো নির্জন স্থানে এই ময়লা-আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করা উচিত।’
উপজেলা পরিবেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সোলায়মান আকাশ বলেন, ‘খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার ফলে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। দূষণের পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ায় রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া এতে জীববৈচিত্র হুমকীর মধ্যে পড়ছে। আশা করি কর্তৃপক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ (সওজের) ফটিকছড়ি সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহাম্মদ ফারহান বলেন, ‘আমরা পৌর কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলা হয়েছে, তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা শীঘ্রই এটি অপসারণের উদ্দ্যোগ নেয়া হবে।’
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সরেজমিনে গিয়ে দ্রুত এসব ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে এবং ভাগাড়ের নতুন স্থান নির্ধারণ করা হবে।’