আব্দুল্লাহ ফারুক,(বাগেরহাট) প্রতিনিধি:-বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার ঘোষগাতী গ্রামে ব্রি ধান–১০৩ জাতের ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) আঞ্চলিক কার্যালয়, গোপালগঞ্জের উদ্যোগে এবং এলএসটিডি প্রকল্পের আওতায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ধান চাষে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে ব্রি ধান–১০৩ জাত। অল্প সময়ে পরিপক্বতা, রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং তুলনামূলকভাবে বেশি ফলনের কারণে কৃষকদের মধ্যে এই জাতের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে।
ফসল কর্তন ও মাঠ দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ও প্রধান ড. আমিনা খাতুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মেহেদী হাসান, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা; সাইফুর রহমান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা; এবং শম্পা খানম, এসএএও, মোল্লাহাট।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন— “ব্রি ধান–১০৩ জাতটি বিশেষভাবে উপযোগী আমন মৌসুমের জন্য। এই জাতটি কম সময়ে পরিপক্ব হয়, উৎপাদন খরচ কম এবং ফলনও বেশি। ফলে কৃষকরা কম পরিশ্রমে ও কম ব্যয়ে বেশি লাভবান হতে পারবেন।”
তারা আরও বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে উচ্চ ফলনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর জাতের চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরি।
উপস্থিত কৃষকেরা জানান, ব্রি ধান–১০৩ চাষে তারা আগের তুলনায় প্রায় ২০–২৫ শতাংশ বেশি ফলন পাচ্ছেন। এতে উৎপাদন খরচও তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে। দ্রুত পরিপক্ব হওয়ায় একই জমিতে পরবর্তী ফসল আবাদ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
কৃষকরা বলেন—“আগে আমরা সাধারণ জাতের ধান চাষ করতাম, ফলে ফলন কম হতো। এখন ব্রি ধান–১০৩ চাষে কম সার ও কম কীটনাশক ব্যবহারেই ভালো ফলন পাচ্ছি। এতে আমাদের লাভ অনেক বেশি।”
ড. আমিনা খাতুন জানান, ব্রি ধান–১০৩ জাতটি উন্নত গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং স্বল্প সময়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিনি বলেন—
“এই জাতটি দেশব্যাপী জনপ্রিয় করতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।”
অনুষ্ঠানে কৃষি কর্মকর্তারা ব্রি ধান–১০৩ জাতের চাষাবাদ পদ্ধতি, বীজ বপন থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
কৃষকরা নতুন প্রযুক্তিনির্ভর ধান চাষের প্রসারে এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।