শৈহ্লাচিং মার্মা, রুমা প্রতিনিধি (বান্দরবান):- বান্দরবানের রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা মৌজায় জোত পারমিটের সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গাছ কেটে বন উজাড় ও কাঠ পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঙ্গু নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে, যা নৌপথে পাচারের অপেক্ষায় রয়েছে।
গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পান্তলা পাড়ার ঘাটের উজানে সেপ্রু মুখ এলাকায় কাঠের বিশাল চ্যালি তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে সাতকানিয়া–খাগরিয়া এলাকার কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিলেন। তারা জানান, ব্যবসায়ী মো. জাহেদ মাঝির তত্ত্বাবধানে দেড় মাস ধরে কাজ করছেন এবং মাসিক ১৫–১৬ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। জাহেদ মাঝি বলেন, তারা বান্দরবানের ব্যবসায়ী কাউছার সদাগরের কাঠ নদীতে নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্থানীয়দের মতে, জোত পারমিটে নির্দিষ্ট এলাকার অনুমতি থাকলেও কাঠ ব্যবসায়ী চক্রটি ভিন্ন এলাকা থেকে গাছ কাটছে। এতে পাহাড় ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছে, ঝিরি–ঝরনার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাউছারের হয়ে কাজ করেন কামাল নামের এক ব্যক্তি, যিনি কাঠ কেনা-কাটা ও পরিবহনের দায়িত্বে আছেন।
সরেজমিনে নদীর দুই তীরজুড়ে কাঠের সারি দেখা গেছে—যা যেকোনো সময় নদীপথে পাচারের জন্য প্রস্তুত।
বনবিভাগ রুমা রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ রহমান জানান, গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নে কয়েকটি পুরোনো জোত পারমিট চালু রয়েছে। কোন মৌজায় কার নামে অনুমোদন রয়েছে, তা তিনি তাৎক্ষণিক বলতে পারেননি। সাবেক রেঞ্জার মো. মুনতাসীর জানান, পান্তলা পাড়া এলাকার তিনজনের নামে জোত পারমিট ছিল, তবে কাউছার কার নামে জোত করেছেন তা কাগজপত্র ছাড়া নিশ্চিত করা যাবে না।
স্থানীয়দের দাবি, জোত পারমিটের আড়ালে চক্রটি সীমার বাইরে বিশাল এলাকায় গাছ কাটছে। এতে বনভূমি নষ্ট হচ্ছে, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। তারা কাঠ পাচার রোধ ও জোত পারমিট পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।
