মোঃ রফিকুল ইসলাম সবুজ
যশোর শহরের বেজপাড়া কবরস্থানসংলগ্ন বারো ঘর কলোনির সামনের একটি রাস্তা নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ শনিবার (৫ জুলাই) সারাদিন ধরে উত্তেজনা চলতে থাকে। বিকেলে হঠাৎ একপক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায়, এতে দুইজন আহত হন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বারো ঘর কলোনির রাস্তার একপাশের একটি প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মৃত খোরশেদের ছেলে ফাহিম ও জামাই রনি লোকজন নিয়ে এসে প্রাচীরটি ভেঙে দেন এবং বারো ঘর কলোনির মূল সড়কের সঙ্গে তাদের বসতঘর সংযুক্ত করেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফাহিমদের নিজস্ব পৌরসভার রাস্তা থাকলেও, তারা জোরপূর্বক এই রাস্তাটি দখলের চেষ্টা করছেন। বারো ঘর কলোনির বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন, মিকাইল হোসেন, আব্দুল মালেক, আব্দুল কাদের, সোরাব আলী, দীপা ও শিপা বলেন, এই রাস্তাটি তাদের নিজস্ব জায়গা ছেড়ে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে সব বাসিন্দা সহজে চলাচল করতে পারেন। তারা আরও জানান, রাস্তার মুখে একটি দেয়াল তৈরি করে চলাচল নিয়ন্ত্রিত রাখা হয়েছিল, যার ওপাশে খোরশেদের বাড়ি। অথচ খোরশেদের বাড়ির দুই পাশেই বৈধ পৌরসভার রাস্তা রয়েছে। তবুও প্রভাব খাটিয়ে তাদের রাস্তা দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, শনিবার সকালে খোরশেদের পরিবার প্রাচীর ভেঙে রাস্তাটি জবরদখল করে। এ সময় প্রতিবাদ জানালে তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। বিকেলে খোরশেদের স্ত্রী মুন্নী, মেয়ে চাঁদনী, ছেলে ও জামাতাসহ বহিরাগতরা এসে বারো ঘর কলোনির হাবিবের স্ত্রী শিল্পী এবং নাসিমের স্ত্রী ডলির ওপর হামলা চালান। এ সময় শিল্পীর বুকে ইট ছুড়ে আঘাত করা হয়।
পরে পুলিশকে খবর দিলে যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই মিনারা খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত রনি সাবেক কাউন্সিলর রিয়াজের ভাইপো। বিএনপির প্রভাব দেখিয়ে তিনি এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। কেউ কেউ দাবি করেন, ওই বাড়িতে মাদক কারবারও চলে। এ কারণে বিকল্প রাস্তাটি ব্যবহার করতে মরিয়া তারা।
অন্যদিকে খোরশেদের স্ত্রী মুন্নীর দাবি, তাদের জমির বৈধ কাগজে এই রাস্তাটির অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু বারো ঘর কলোনির বাসিন্দারা তাদের চলাচল করতে দিচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়েই তারা প্রাচীর ভেঙে চলাচলের পথ উন্মুক্ত করেছেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।