আবু নাঈম রিপন, নরসিংদী প্রতিনিধি:- নরসিংদীতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৫ জন নিহত এবং শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।
গত ২১/১১/২৫ ইং (শুক্রবার) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে সারাদেশের মতো নরসিংদীতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মুহূর্তেই পুরো জেলা কেঁপে ওঠে, মানুষ আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে।
নরসিংদী শহরের গাবতলী এলাকায় ছয়তলা নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে পাশের একতলা বাড়ির ওপর পড়ে। এতে বাড়ির মালিক দেলোয়ার, তার ছেলে ওমর এবং মেয়ে তাসফিয়া আহত হন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দেলোয়ার এবং ওমরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
এছাড়া জেলার ছয়টি উপজেলায় ভূমিকম্পে কম-বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হিসেবে পলাশ উপজেলা এবং মাধবদী অঞ্চলকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গুলশানা কবির জানান, ভূমিকম্পে আহত হয়ে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনো নতুন আহতরা হাসপাতালে আসছেন।
এদিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে ভূমিকম্পের পরপরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শুরু হওয়া এ অগ্নিকাণ্ড জাতীয় গ্রিডের সাবস্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ পুড়িয়ে দেয়, ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুল শহীদ জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক বলেন, ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতেই আগুন লাগে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।
নরসিংদীতে এ পর্যন্ত ৫ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতরা হলেন—
গাবতলী এলাকায় ভবন ধসে ওমর এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা দেলোয়ার।
শিবপুর আজকিতলায় ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে আহত হয়ে মারা যান ফোরকান আলী।
পলাশের মালিতা গ্রামে মাটির ঘর ধসে নিহত হন কাশেম আলী।
ডাঙ্গায় ভূমিকম্পের সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান নাসির উদ্দিন।
সব মিলিয়ে নিহত ৫ জন, আহত শতাধিক।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী, পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম পিপিএম এবং সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমিরুল হক শামীম আহতদের চিকিৎসা সেবার খোঁজখবর নিচ্ছেন।
আমরা সকল নিহতের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।